Tuesday, April 12, 2016

কুয়াশাদুপুর




                            
সব কুয়াশা আখর এখন থাক
রোদ লেখো , রোদ
আকাশে মাটিতে জলকণায় ,
দু এক ফোঁটা
ধূসর পান্ডুলিপির প্রতি পাতায়।
সমস্ত মরশুমি ফুল
কারুময় বাগিচা ছেড়ে
উঠে আসুক সহজ দাওয়ায়
দাওয়া থেকে কপালে তোমার...আঁচলে
নিস্তব্ধ কুঠুরি যত খুলে দাও
সশব্দ প্রত্যাঘাতে ।
সব চোখ হয় নাতো
পাখির নীড়ের মত...সব চোখ
খড়কুটো বিচালির নিশ্চিত আশ্রয়
কিছু কিছু আসমানি নীল
ধরে রাখে আশান্ত নদী ঢেউ
উড়ে যাও ,অথবা ডুবুরি গহনে
ঝিনুক শব্দ খুঁজে খুঁজে
হেঁটে যাই বালুতটে
কুয়াশাদুপুরে
একা...বা বহুজনে।

রোজনামচা



যেমন খুশি এঁকে ফেলো এক ছবি
ভরে দিও তাতে ভোরের নরম রঙ
কথা সব যত বলতে পারনি আজও
এখনি তবে বলে ফেলো সত্বর

রোজনামচার ছোট ছোট ফাঁক জুড়ে
জমেছে অনেক বিপজ্জনক ধুলো
ভেজা হাতে তা আলতো মুছিয়ে নিয়ে
বিছিয়ে দিও আদর-কোমল তুলোট

মেঠোপথে আজ যেতেই পারি নেমে
খুঁ জে দাও যদি একটুকু অবসর
কথা দিতে হবে পাশে যাবে পায়ে পায়ে
বিকেল গড়ানো সন্ধ্যায় দেবে মন

আধফোটা কলি যে অস্ফুট গান গায়
সুরে তার গেঁথো মন-কেমনের মালা
খেলাঘর জুড়ে অমনোযোগী বাতাস
পথ শেষ ---তবু রয়ে যায় পথচলা

অপসারণ



এখন চলে যেতে বাধা নেই
আলোরা সবুজ সংকেতে
লিখেছে গভীর চলে যাওয়া
এখন বাধা নেই চলে যেতে
নিশ্চুপ ঝরে পড়া বৃক্ষশাখ হতে
অথবা মসৃণ অপসারণ
জলপদ্মের পাতা ছুঁয়ে থাকা
বারিবিন্দুর মতন
চলে তো যাওয়াই যায়
সেই দূরদেশে
সমস্ত ভালোবাসা গেছে চলে
যেইখানে----অভিমানশেষে

যে পাখি মেলেছে ডানা আকাশের দিকে
তাকে কে ফেরায় বল তৃণমাটি সুখে?!

সুলগ্না



লগ্ন যে বয়ে যায়
সুলগ্না, কবে আসবে তুমি?
কাশফুল আঁচল
অনায়াস উদার মায়ায় উড়ে  উড়ে
ঢেকে দেবে  সমস্ত রৌদ্রক্লান্ত দ্বিপ্রহরকাল
পাহাড়ের  ঢালে  গড়িয়ে নামবে
যাযাবরী সন্ধ্যা ও যাম  
সংসারী পাথরদের একপাশে  রেখে
রাতের আঁধারে  জ্বেলে দেবে
মনোহারী আলো ও আশ্বাস  
মাটি বা তৃণের কাছে
আমার তো আর নেই কোন দায়
পাখিরা বলেছে শিখে নেবে প্রত্যাগমন
সবুজ ফসল বুঝে নেবে সোনালির পূর্ণ গান
পথকোলাহলে
শোনা যাবে শিশুদের মায়াকলতান
আমি এই ধুলোমাটি জীবনের
মুছে নিয়ে মুখ
আঁচলে তোমার খুঁজে নেব 
এক দীর্ঘ নির্জন ঘুম।

অবেলার রূপকথা




     
দালান জুড়ে চড়ুইপাখি রোদ
ঘাসফুল বিকেল
জলসই সখিরা অবেলার স্নানশেষে
 গৃহাভিমুখী
ফিরে গেছে নিজস্ব ডাঙায়
ডানায় মেখে নিয়ে  তিতির গন্ধ
ভেজা অলক প্রান্ত হতে টুপটাপ  
ঝরে পড়ে বিন্দু সুখ বিন্দু দুখ
এঁকে যায় প্রহর ও পথদাগ
প্রাচীন লিপিকথায়।
অন্তহীন কারুকাহিনীময়
শিল্পিত ইতিহাস
বিনম্র তথ্যতত্বে
বলেছিল যে অগণিত যাতায়াত
গোপন সুড়ঙ্গে  সুরম্য রথে ও পথে
সেইসব শেষে
এখন দালান জুড়ে
শুধুই চড়ুইপাখি রোদ
ঘাসফুল বিকেল
অবেলার রূপকথা আর নিমগ্ন বেঁচে থাকা